Engage Your Visitors!

Click here to change this text. Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit. Ut elit tellus, luctus nec ullamcorper mattis, pulvinar dapibus leo.

কেআইবি’র কমিটি অবৈধ,কুচক্রি মহল দখলে রেখেছে : ড. রাজ্জাক

নিজস্ব প্রতিবেদক :

কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশ (কেআইবি)-এর বর্তমান কমিটিকে অবৈধ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে সদ্য সাবেক কৃষিমন্ত্রী। ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক। আওয়ামী লীগের এ প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, ছয় বছর ধরে তারা নতুন নেতৃত্ব নির্ধারণ করতে দেয়নি। নিম্ন আদালত থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত বর্তমান কমিটিকে অবৈধ বলে রায় দিয়েছে, তারপরও তারা ক্ষমতা ছাড়ছে না।

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি,২০২৪) কৃষিবিদ দিবস-২০২৪ উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে ড. রাজ্জাক এসব কথা বলেন। খামারবাড়িস্থ বিএআরসি মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

কেআইবি নির্বাচন প্রসঙ্গে ড. রাজ্জাক বলেন, প্রিয় কৃষিবিদ ভাইয়েরা। আপনারা জানেন ২০১৮ সাল থেকে নির্বাচন (কেআইবি) হয় না। ১৮ সালের নির্বাচন ছিল। নির্বাচনের আগে এমন ভুয়া ভোটার করা হলো, যে ভোটারের কোনো ঠিকানা নাই। তার (ভুয়া ভোটার) বিরুদ্ধে একটা ইনজেংশন হয়। কিছু সন্ত্রাসী আমাদের কিছু কৃষিবিদকে নির্মমভাবে আঘাত করে। সেই মামলা দীর্ঘস্থায়ী করে করে ৬ বছর কোনো নির্বাচন করতে দেয় নাই। প্রতিটি কোর্ট (আদালত) বলেছে, এখন যে কৃষিবিদের (কেআইবি)  সভাপতি ও মহাসচিব আছে, এই পুরো কমিটি অবৈধ। দ্রুত একটা নির্বাচন হওয়া দরকার। এটা সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের রেজিস্টার্ড। নিয়ম অনুযায়ী সরকারের একজন প্রতিনিধি (প্রশাসক) দায়িত্ব নিয়ে নির্বাচন করে দেবে। যখনই  তারা যেতে চায় তখনই তারা হাইকোর্ট ও আপিলাত ডিভিশনে যায় তারা।

সদ্য সাবেক এ কৃষিমন্ত্রী বলেন, সাধারণত মানুষ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী হলে রিভিউতে যায়। কিন্তু, দেখা যাচ্ছে কেআইবি নির্বাচন ঠেকাতে সেখানেও যাচ্ছে তারা। সেখানেও ফেল মারছে। ১৩ ফেব্রুয়ারি যে মিটিংটা তারা করেলো, সেটা সম্পুর্ণ অবৈধ। সম্পূর্ণ আদালত অবমাননা। যারা দাওয়াতপত্র দিয়েছে তা অবৈধ। বৈধ হলো সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের….।  তার পরেও তারা ক্ষমতার জোড়ে, পেশির জোড়ে তারা এটি করেছে। আসুন আমরা সবাই মিলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে দোয়া করি,তাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। তাদের বিবেক কাজ করুক। বিকে দ্বারা তাড়িত হয়ে অতি শীঘ্রই একটা নির্বাচন দিক। এই নির্বাচনে কৃষিবিদদের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা হবে। কৃষিবিদদের যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য, পেশাগত উৎকর্ষ সাধন, তাদের দাবি দাওয়া, একটা সুযোগ তৈরি হবে।

বর্তমানে কৃষি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. রাজ্জাক বলেন, যারা পেশি শক্তি দিয় অবৈধভাবে ৬ বছর নির্বাচন করতে দেয় নাই, তারা কোনোক্রমেই দেশপ্রেমিক নয়। তারা কোনো ক্রমেই কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশনকে ভালবাসে না। এর বিরুদ্ধে আপনাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মন্ত্রী যখন ছিলাম না তখন আমরা ঐক্যবদ্ধ প্যানেল দিয়েছিলাম। এই বয়সে আমি সদস্য দাড়িয়েছিলাম।

তিনি বলেন, বলা হয় অমুকের সিদ্ধান্তে কৃষিবিদ (কিআইবি) চলবে। এই কৃষিবিদ, খামারবাড়ি সবকিছুই, শেরে বাংলা-একজনের কথায় চলবে। এটার বিরুদ্ধে আমি এবং শওকত মোমেন শাহজাহান (মরহুম সাবেক এমপি),বদিউজ্জামান বাদশাহ, মান্নান-চার জন কৃষিবিদ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম, আপনাদের নিয়ে। সেই নির্বাচনটিও আমরা করতে পারি নাই।

ড. রাজ্জক বলেন, মন্ত্রী হওয়ার জন্য রাজনীতি করি না। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন অনেক সম্মান দিয়েছেন। অনেক গৌরব দিয়েছেন। ৮ বছর চাকরি ছিল। চাকরি থেকে রিজাইন দিয়ে এমপি হয়েছিলাম। ছেলে মেয়েরা রাজি হয় নাই। স্ত্রী রাজি হয় নাই। পরিবারের কেউ রাজি হয় নাই। সমস্ত কিছু অমান্য করে, চাকরি ছেড়ে দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে এমপি হয়েছি (২০০১ সাল)। আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আজকের এই অবস্থানে এসেছি।

তিনি বলেন, এরপর থেকে একটানা আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে আজকের এ পর্যায়ে এসেছি। সর্বদা সর্বোচ্চ ত্যাগের মানসিকতা ছিল। ১৯৬৪ সালে প্রথম বঙ্গবন্ধুকে দেখে তার বক্তব্যে আমার শিরা-উপশিরায় যে দেশপ্রেম জাগ্রত হয়েছিল তা আজও আমার ধমনীতে বহমান। সেই শক্তি নিয়ে আমি রাজনীতি করি। তাই আগেও যেভাবে কৃষির সাথে ছিলাম, এখনো সেভাবে কৃষির সাথে থাকবো।

অনুষ্ঠানে বাকৃবি সাবেক ভিসি ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এম এ সাত্তার মণ্ডল বলেন, কৃষিবিদের মধ্যে আজ বিভেদ। কিন্তু ১৯৭৩ সালে ১৩ ফেব্রুয়ারি কৃষিবিদ দিবসের সূচনা বঙ্গবন্ধু করেছেন বাকৃবিতে। যার পরে এই কৃষিবিদ দিবস শুরু হলো। তাই এই দিবসে সাথে বাকৃবি স্মৃতি জড়িত। নানা সংগঠন থাকতে পারে, নানা দলমত থাকতে পারে, তবে কৃষিবিদদের উন্নয়নে, দেশের কৃষির উন্নয়নে সকলকে ঐকমত্য হতে হবে।

তিনি আরো বলেন, বিগত কয়েক বছর কৃষি খাতে যে গবেষণা, যেমন বিনিয়োগ শুরু হয়েছল এখন তার ধারা অব্যাহত রাখা দরকার। কৃষি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে আমরা আব্দুর রাজ্জাককে পেয়েছি। আশা করি তিনি সর্বদা আমাদের সাথে থাকবেন। কৃষির সাথে থাকবেন।

কৃষি অর্থনীতিবিদ ইউনিভার্সিটি অব গ্লোবাল ভিলেজের ভিসি ড. মো: জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে এ আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে বাংলাদেশ দ্বিগুণ থেকে পাঁচগুণ পর্যন্ত খাদ্য উৎপাদন বাড়িয়েছে। এই উৎপাদনের ধারা অব্যাহত থাকলে আগামীতে বাংলাদেশ আরো অনেকে এগিয়ে যাবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ড. মো: আব্দুর রাজ্জাকের যথাযথ নেতৃত্বে বিগত কয়েক বছর কৃষির প্রচুর সমৃদ্ধি হয়েছে। করোনাকালীন সময়ে বড় সাফল্য আমরা দেখেছি। খাদ্যের কোনো সঙ্কট হয়নি।

আলোচনা অনুষ্ঠানে সাবেক সিনিয়র সচিব আব্দুস সামাদ ফারুক, ডিএইর সাবেক মহাপরিচালক মো: হামিদুর রহমান, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনিস্টিউটের মহাপরিচালক ড. মো: শাহজাহান কবীর প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

Scroll to Top