নিজস্ব প্রতিবেদক :
‘বাংলাদেশে কমবয়সী নারী ও বালিকাদের স্বাস্থ্যকর জীবনের জন্য জলবায়ু-সহনশীল প্রাণিজ আমিষ জাতীয় খাদ্য নিশ্চিতকরণে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান।
রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে হোটেল লেক ক্যাসেল, গুলশান-২ এ অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশে কম বয়সী নারী ও শিশুদের স্বাস্থ্যকর জীবনের জন্য জলবায়ু-সহনশীল প্রাণিজ আমিষ খাদ্য ব্যবস্থা’ (AQUAFOOD) শীর্ষক প্রকল্পের স্টেক হোল্ডারদের নিয়ে মতবিনিময় এবং সূচনা কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা জানান।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ইমদাদুল হক চৌধুরী, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. দিদার উল আলম, ইনস্টিটিউ অব পাবলিক হেলথ নিউট্রিশন (আইপিএইচএন) এর পরিচালক জনাব ড. শাহ গোলাম নবী উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া কর্মশালায় চেয়ারপারসন হিসেবে ড. শকুন্তলা থিলস্টেড, ড. নান্না রুস, প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর এবং AQUAFOOD প্রকল্পের সমন্বয়কারী, ড. ডেভিড লিটল, অধ্যাপক, স্টার্লিং ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাজ্য উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকবৃন্দ, বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষকবৃন্দ, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার উন্নয়ন বিশেষজ্ঞগণ এবং উদ্যোক্তাবৃন্দ কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।
এসময় মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জের কারণে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ, বিশেষ করে যারা দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করে, তারা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা এবং অপুষ্টিতে ভোগে। জলজ সম্পদগুলো স্বাস্থ্য ও জীবিকা নির্বাহে কিভাবে অবদান রাখে তা বোঝার জন্য উপযুক্ত তথ্যের অভাব ঝুঁকিপূর্ণ এসব জনগোষ্ঠীকে আরো ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে বলে তিনি বলেন।
দারিদ্র্য, সামাজিক পক্ষপাত, বাল্য বিবাহ এবং কম বয়সে গর্ভাবস্থার সম্মুখীন কিশোরী ও যুবতীরা বিশেষভাবে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। কার্যকর স্থানীয় পদক্ষেপ এবং নীতি বাস্তবায়নের অনুপস্থিতির কারণে বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ব্যবস্থাপনা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী বলেন, প্রাণিজ খাদ্য উৎপাদন, পুষ্টি এবং জনস্বাস্থ্যের মধ্যে খাতগত বৈষম্য সমন্বিত নীতিমালাগুলো বাস্তবায়নে বাধা দেয় যা জলবায়ু পরিবর্তনের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনাকে সীমিত করে তোলে। তবে AQUAFOOD প্রকল্পটি গবেষণার মাধ্যমে প্রাণিজ খাদ্যের সাথে সম্পর্কিত মৎস্য খাতসহ মানুষের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সম্পর্কিত তথ্য ও জ্ঞানের যে সীমাবদ্ধতা রয়েছে তা চিহ্নিত করতে পারবে বলে মন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তৃণমূল পর্যায়ে AQUAFOOD প্রকল্পটির কার্যক্রমকে সম্প্রসারিত করার মাধ্যমে বিশেষ করে নারী ও কিশোরী মেয়েদের তথা সমগ্র সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য অধিক পরিমাণে পুষ্টি সহায়তায় অবদান রাখবে বলে মন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং প্রকল্পটির বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে সম্ভাব্য সকল ধরণের সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
প্রানিজ খাবার বাংলাদেশের মানুষের খাদ্যাভ্যাস এবং অর্থনীতি উভয় ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, দেশের সমৃদ্ধ উপকূলীয় এবং নদীমাতৃক ইকোসিস্টেম ঐতিহ্যগতভাবে মৎস্য আহরণের ব্যাপক সূযোগ করে দিয়েছে এবং মৎস্য চাষকে দ্রুত সম্প্রসারণের ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে।
মৎস্য খাত জাতীয় জিডিপিতে ২.০৮% এবং কৃষি জিডিপিতে প্রায় ২১.৮৩% অবদান রাখে উল্লেখ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ করার লক্ষ্যে সরকার মৎস্যখাতকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে বিবেচনা করছে বলে তিনি এসময় মন্তব্য করেন।